সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়
ছাতক, সুনামগঞ্জ।
EIIN:129821
MPO Index:
প্রতিষ্টাকাল:১৯৭৬ খ্রি.
প্রধান শিক্ষক: জনাব মো. শরীফ উদ্দিন
স্কুলের ইতিকথা- প্রথম পর্ব :
সিমকাক জুনিয়র হাইস্কুল থেকে এস.পি.পি.এম.হাইস্কুল (১৯৭৬-২০০২)
১৯৬৩ইং সালে তৎকালীন পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রীয় সরকার এফআইডিসি বা বন শিল্প উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনায় তৎকালীন সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ মহকুমার অন্তর্গত ছাতক থানার কুমনা , পূর্ব কামারগাও,বাগবাড়ী,মাধবপুর মৌজায় ১৩৯ একর ভূমি অধিগ্রহন করে ‘সিলেট মন্ড ও কাগজ কল’ নামে একটি প্রজেক্ট চালু করে । ১৯৬৩-৭০ইং পর্যন্ত প্রকল্পটি এফআইডিসি নামে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১-৭৮ইং এর মার্চ পর্যন্ত বিএফআইডিসি নামে পরিচালিত হয়। এপ্রিল ১৯৭৮ থেকে নভেম্বর ২০০২ইং পর্যন্ত বিসিআইসি – এর অধীনে সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস নামে পরিচালিত হয়।
১৯৭৫ সালে পরীক্ষামূলক ভাবে মিলটি উৎপাদন শুরু করে এবং ১৯৭৭ সালের জুলাই মাসে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আসে। মিলের কর্মকর্তা –কর্মচারী ও এলাকার ছেলে-মেয়েদের পাঠ দানের উদ্দেশ্যে ০২/০১/১৯৭৬ইং সালে মিলের জেনারেল ম্যানেজার জনাব ফজলুল করিম - এর পৃষ্ঠপোষকতায় - এম.এ. জনাব আতা আহসান উল্লাহকে সভাপতি ও কর্মকর্তা জনাব দেলোয়ার হোসেনকে সম্পাদক করে সিমকাক (সিলেট মন্ড ও কাগজ কল) জুনিয়র হাইস্কুল- এর প্রতিষ্ঠাতা কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। বিদ্যালয়ের ১ম একাডেমিক ভবন হিসাবে শহিদ মিনার ,পল্টন, মিনিমার্কেট সংলগ্ন বর্তমান পোষ্ট অফিস ও তার পার্শ্বে অবস্থিত কলোনীতে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়।বর্তমানে পরিত্যাক্ত প্রথম একাডেমিক ভবনে ব্যবহৃত ব্ল্যাক বোর্ডগুলো এখনও কালের নিরব স্বাক্ষী হয়ে আছে।
ডি.ডি.পি. আই. চট্রগ্রামের নির্দেশে জেলা শিক্ষা অফিসার - সিলেট ১৯৭৭ ইং সালে প্রথম স্কুল পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনের নির্ধারীত ছক পূরন করে শিক্ষা অফিসার - সিলেট, ডি.ডি.পি.আই. চট্রগ্রাম বরাবরে ১৯৬২ ইং সালের বেসরকারী বিদ্যালয় আইনের ৪ ধারা - ৩ উপধারা মোতাবেক রেজিঃ মেমো নং ৩৪০৪/৩জি, তাং৩০/১২/১৯৭৭ইং প্রেরন করেন এবং বিদ্যালয়টি ১ম থেকে ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত রেজিঃলাভ করে। পরবতীতে ১৯৭৯ইং সালে ৯ম শ্রেনি এবং ১৯৮০ইং সালে ১০ম শ্রেনি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা ১৯৮১ ইং সালে অনুষ্ঠিত এস এস সি পরীক্ষায় স্কুল থেকে প্রথম বারের মত অংশ গ্রহন করে এবং শতভাগ পাশের মাধ্যমে এস এস সি পরীক্ষার যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয় পাঠাগার, স্কাউট, গার্লস গাইড ও বিএনসিসি গঠিত হয় । ১৯৮৪ ইং সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়। কিন্তু কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ যে সম্মানী প্রদান করেন তা যথেষ্ট বিবেচিত হওয়ায় সম্মানীত শিক্ষক- শিক্ষিকা ও কর্মচারীগণ এমপিও ভূক্ত টাকা উত্তোলন না করার সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৮০ ইং সালে বিদ্যালয়টি ২য় একাডেমিক ভবন হিসেবে বর্তমান টিচার্স কলোনীতে স্থানান্তরিত হয় এবং ১৯৮৬ইং সালে ৩য় একাডেমিক ভবন হিসেবে বর্তমান ভবনে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমান একাডেমিক ভবনের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন ডঃ আজিজুর রহমান, ই.ডি. এবং উদ্ভোধন করেন বিসিআইসি-র তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব এ কে এম মোশারফ হোসেন। ১৯৭৬ ইং হতে ৩০ শে নভেম্বর ২০০২ ইং পর্যন্ত বিসিআইসি-র অধীনে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়। বিসিআইসি পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এস. পি. পি. এম. উচ্চবিদ্যালয় শিক্ষা ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করে। আন্তঃ বিসিআইসির-ক্রীড়া ও সাংস্কতিক প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়টি অনেক পুরস্কার লাভ করে।১৯৯৪ ইং সালে এফ .এস.এস.পি. প্রজেক্টের আওতায় বিদ্যালয়টি বেতন মওকুফ কর্মসূচী ভূক্ত হয়।
স্কুলের ইতিকথা-দ্বিতীয় পর্ব :
এস.পি.পি.এম. হাই স্কুল পুনঃ এমপিও ভূক্ত(২০০৩ইংহতে অদ্যাবদি)
সরকারী লোকসানী প্রতিষ্ঠানসমূহ বেসরকারী খতে হস্থান্তরের উদেশ্যে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন গঠিত হলে সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস তার অন্তর্ভূক্ত হয়। মিলটি বেসরকারী খাতে হস্থান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হলে ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এস.পি.পি.এম. উচ্চ বিদ্যালয়-এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। এমতাবস্থায়, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ ০১/০৭/২০০২ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ৮৪৬- তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারের শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ পূর্বক এমপিও ভূক্ত করার জন্য এমডি মহোদয় বরাবর পত্র প্রেরণ করে। এমডি দপ্তরে পত্রটি ডাইরি নং ৭৩২, তারিখ-০৫/০৮/০২ ইং গৃহীত হয়। ০৬/০৮/০২ইং তারিখে এমডি দপ্তর হতে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পত্রটি গ্রহণ করেন।
২১/০৮/২০০২ইং তারিখে ‘দৈনিক প্রথম আলো’ পত্রিকায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশন কর্তৃক শিল্প প্রতিষ্ঠান বিক্রি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে মিলের সংক্ষিপ্ত বিবরনের মধ্যে স্কুলের জায়গাসহ ১৩৯.৩৬ একর ভূমি (কম/বেশী) উল্লেখ করা হয় । ১২/১১/২০০২ইং সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব মোঃ আব্দুর রব বিসিআইসি প্রধান কার্যালয় থেকে সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস লিঃ, ছাতক, সুনামগঞ্জ-কে ৩০/১১/২০০২ইং তারিখ হতে ‘পে-অফ’ এর নোটিশ সংক্রান্ত পত্র প্রেরণ করেন। যার সূত্র নং বিসি আইসি/ কোম্পানী/১.৭৮/২০০২/১৬২১, তারিখ ১২/১১/০২ইং। ৩০শে নভেম্বর ২০০২ ইং হতে মিল ‘পে অফ’ হয়। বিসিআইসি এর পে-অফকৃত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আব্দুর রব, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা মিসেস শাহানা আক্তার স্কুলের কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার উদ্যেগ গ্রহন করেন এবং ১০/১২ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক– শিক্ষিকা দিয়ে পাঠদান অব্যাহত রাখেন।
এদিকে এস.পি.পি.এম. লিঃ কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। চলতি দায়িত্বে থাকা এমডি মিঃ সন্যাল বাবুর পক্ষ্যে এম এ জনাব মোকারম আলি ইনভেন্টরী করে স্কুল বন্ধ করার পত্র দেন। তখন স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সংগঠন ‘প্রাছাস’ এর নেতৃত্বে এলাকার অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। উক্ত আন্দোলনে প্রাক্তন যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তারা হলেন- শাহীন আহমদ চৌধুরী, হাজী রাসেল মাহমুদ, কফিল উদ্দিন, এনামুল হক চৌধুরী (এনাম) , রিয়াজুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, ইকবাল হোসেন, খলেদ-বিন-শহীদ প্রমুখ।
ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসীর আন্দোলনের পাশাপাশি তৎকালীন সংসদ সদস্য জনাব কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন-এর সর্বাত্মক সহযোগিতায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। সিলেট শিক্ষা বোর্ড- এর সাথে যোগাযোগ করে পূর্বের কমিটি ভেঙ্গে সংসদ সদস্য জনাব কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনকে- সভাপতি ও জনাব রাসেল মাহমুদকে সহ সভাপতি করে এডহক কমিটি/২০০৩ ইং গঠন করা হয়। এডহক কমিটি- দায়িত্ব গ্রহনের পর স্কুলের সীমানা প্রাচীর পৃথক করে প্রধান ফটক খুলে দেন।
অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০০৩ ইং সনে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নেয়া হয়। ২০০৩ ইং সালের এস.এস.সি. পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ নিরলস পরিশ্রম করে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেন। ২০০৩ ইং সালে জিপিএ পদ্ধতিতে এস.এস.সি. ফল প্রকাশ করা হয়। সিলেট বোর্ড- এ ১০টি জিপিএ-র মধ্যে এস.পি.পি.এম. উচ্চ বিদ্যালয় ০২টি জিপিএ অর্জন করে।
18/08/2003 ইং তারিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুর রব -এর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব ইনাম আহমদ চৌধুরী স্কুলের ভূমি ১.৫ একর সিডিউল বহির্ভূত রাখার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে সংসদ সদস্য জনাব কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ সভাপতি জনাব রাসেল মাহমুদ,পি .আর.ও. জনাব আব্দুল কাইয়ুম-কে সাথে নিয়ে ভূমি সিডিউল বহির্ভূত রাখার বিষয়টি চুড়ান্ত করেন। ১৩/১০/২০০৪ ইং তারিখে শিল্প প্রতিষ্ঠান বিক্রির আন্তর্জাতিক দরপত্র দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশি ত হয়। এবারের বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন ১৩৯.৫৩ একর জমি হতে স্কুলের জন্য নির্ধারীত ১.৫ একর জমি বাদ দিয়ে বিক্রয় যোগ্য জমির পরিমান ১৩৮.০৩ একর উল্লেখ করে। পরবর্তীতে নামজারী মোকাদ্দমা নং ১১৯৬/০৬-০৭, খতিয়ান নং-৭৩০, জেএল নং-২১৫, মৌজা-কুমনা এর 1.5 একর ভূমি স্কুলের নামে নামজারী করা হয়।
১৪/03/২০০৪ইং তারিখে সংসদ সদস্য জনাব কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনকে সভাপতি ও জনাব রাসেল মাহমুদকে সহ-সভাপতি করে ০৯ সদস্য বিশিষ্ট নিয়মিত ম্যানেজিং কমেটি গঠন করা হয়। ১০/০৫/২০০৪ইং তারিখে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এস.পি.পি.এম.উচ্চ বিদ্যালয়কে (৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণী) স্তর পরিবর্তনের মাধ্যমে এমপিও ভূক্ত করে। যার স্মারক নং শা৪/১/জি-৪/২০০৪/২৩/। স্কুল এমপিও ভূক্ত করার ব্যাপারে জনাব কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়
ছাতক, সুনামগঞ্জ।
“গুনগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে আমাদের সামগ্রিক প্রয়াস। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল শিক্ষা সবার আগে। -------------------বর্ণমালা”
মোবাঃ +880 1727077740
ই-মেইল: scho129821@gmail.com
ওয়েব: www.sppmhs.edu.bd